Wednesday, November 28, 2007

সন্ধ্যায় গানের কথা-সুরে তোমাকে..


সবকথা বলতে নেই। কিছু কথা উহ্য থাকা ভালো। গানের কথা আর সুর ছুঁয়ে যাক শুধু তাকেই যে জানে সেই গোপন কথা, যার কাছে জমা আছে সমুদ্রের দু'একটি ঢেউ।।

দু'তিন ধরে আমার শরীরটাই বেশ খারাপ যাচ্ছে। শুয়ে শুয়ে কাটাচ্ছি অসুস্থ সময়। সঞ্জীব চৌধুরী ভীষণ অসুস্থ তা জানা ছিলো। বিকেলবেলা টিভির পর্দার নীচের অংশে দেখলাম মধ্যরাতে তিনি মারা গেছেন। দুঃখ পেলাম। একটু আগে যখন একাকী বিছানায় শুয়ে আছি, তখন কিছু লাইন মনের গহীনে খেলা শুরু করলো, সেই খেলাটা অশ্রু হয়ে ঠোঁটে নোনা স্বাদ দিয়ে গেলো।

চোখটা এতো পোড়ায় কেনো, ও পোড়া চোখ সমুদ্রে যাও!
সমুদ্র কি তোমার ছেলে, আদর দিয়ে চোখে মাখাও
বুক জুড়ে এই বেজান শহর হা হা শুন্য আকাশ কাঁপাও
আকাশ ঘিরে শঙ্খচিলের শরীরচেড়া কান্না থামাও
সমুদ্র কি তোমার ছেলে, আদর দিয়ে চোখে মাখাও
আমি তোমার কান্না কুড়াই, কান্না উড়াই, কান্না তাপাই
কান্না-পানি পান করে যাই এমন মাতাল কান্না লিখি
সমুদ্র কি তোমার ছেলে, আদর দিয়ে চোখে মাখি।
চোখটা এতো পোড়ায় কেনো, ও পোড়া চোখ সমুদ্রে যাও
সমুদ্র কি তোমার ছেলে, আদর দিয়ে চোখে মাখাই

আমি পাল্টে যাচ্ছি ভীষণ করে। বেঁচে আছি শুধু এই উপলব্ধিটাই আছে। 'আমি তোমাকেই বলে দেবো' বলে আর গান গেয়ে উঠবো না। কাউকেই আর কিছু বলার নেই। জীবিত আমি আবারো মৃত হলাম বলতে গিয়েই, অনেক কম সময়ে অনেক বেশীই বলে ফেলেছিলাম। বোকা আমি! আবারো হয়তো মানুষ চিনতে ভুল করেছি। তাই পুরাতন সময়টাই আমায় হাতছানি দিয়ে ডাকে। আমিও সাড়া দিয়ে এগিয়ে যাই... বুঝি আমি হৃদয়হীন। অযথাই কড়া নেড়েছি ভুল দরজায়। দরজা কেউ খোলেনি, বরঞ্চ আমার হৃদয়টাই দুয়ার খুলে হারিয়ে গেছে।

আমি তোমাকেই বলে দেবো,সেই ভুলে ভরা গল্প-
কড়া নেড়ে গেছি ভুল দরজায়
ছুঁয়ে কান্নার রং, ছুঁয়ে জোছনার ছায়া

আমি কাউকে বলিনি সে নাম,
কেউ জানেনা না জানে আড়াল
জানে কান্নার রং, জানে জোছনার ছায়া

তবে এই হোক তীরে জাগুক প্লাবন,
দিন হোক লাবণ্য হৃদয়ে শ্রাবণ
তুমি কান্নার রং, তুমি জোছনার ছায়া

আমি তোমাকেই বলে দেবো, কী যে একা দীর্ঘ রাত-
আমি হেঁটে গেছি বিরান পথে

কতো কাজ জমা পড়ে আছে! কিছুই করা হয়নি, প্রচন্ড মাথাধরা নিয়ে বসলাম কাজ গোছাতে। কিন্তু ভীষণ একটা কষ্ট এ লেখায় আমায় নিয়ে এলো।


কথা বলবো না আগের মতো কিছু নেই
পিছু ডাকবো না, পিছু ডাকার কিছু নেই
সর্বনাশী ঝড়, বুকে উড়ে যাবার কিছু নেই
আগুনে পুড়েছি এ হাত বাড়িয়ে পুড়ে যাবার কিছু বাকি নেই

চোখ ফিরে চায়, পাতা ঝরার দিন যায়
তবু আজীবন কান্না মেঘে দিনযাপন
আমি ভালো নেই, ভালো থাকার কিছু নেই
রাখবো না ধরে যে আর ধরে রাখার কিছু নেই

পাখি অন্য ঘরে, গান গায় অন্য সুরে
এ ঘর অন্ধকার, তারার আলো কোন ঘরে
ঘরে ফিরবো না, ঘরে ফেরার কিছু নেই
রাখবো না ধরে যে আর ধরে রাখার কিছু নেই

হৃদয়হীন আমারও ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। বুঝেছি।। আগুনে পুড়েছি এ হাত বাড়িয়ে পুড়ে যাবার কিছু বাকি নেই.. এবার আর কিছু হবার নয়, শুধু ফুরিয়ে যাওয়া।।
১৮:৫৭, ১৯ নভেম্বর ২০০৭

মিছিলের গান


গা গান গান গান গান তুই গান গেয়ে যা
ঠোঁটে তুলে নে কোনো অমিত শ্লোগান
এ পথ ধরে ধরে হেঁটে চল বহুদূর
পিছে পড়ে থাক সব চেনা অভিমান।

ঐ আকাশে আকাশে কতো রঙ রোদ হাসে
কতো চেনা সুর ইশারায় ছুঁয়ে যায়
অন্ধ বধির এই থাকে পরবাসে
মুখরতা ডাকে সে ফিরে আসেনা
ঘুম ঘুম ঘুম ঘুম ঘুম চোখে চোখ বুজে রয়
আগামীর গান থাকে স্মৃতির ছায়ায়

ঐ মিছিলে মিছিলে ভাসে লাশ, লাশ ভাসে
প্রান্তরে পড়ে থাকা প্রান্তিক মুখ
সব দেয়ালে দেয়ালে লেখা প্রতিবাদ গান
বুলেট রুখে দেয় মানুষের বুক
ঐ সূর্য সারথী পাখি গান গেয়ে যায়
ঘুম চোখে জেগে ওঠে ভোরের মায়ায়।



মিছিলের গান

Tuesday, November 27, 2007

আড়াল বোধ পরাজয়


সেদিনের পর থেকেই কিছু কথা পাঠাতে গেলেই
একগাদা সংকোচবোধ তাড়া করে আমায় ;
যদিও মাঝে একবার কী যেন লিখে পাঠিয়েছি
কিন্তু সে আড়ালটা আর থাকছে না...
কবিতা ভালোবাসি, তাই কবিতা প্রতিদিন
গান ভালোবাসি, তাই চলে আসে প্রিয় গান;
যদিও মাঝে একবার কী গান যেন শুনিয়েছি
কিন্তু সে আড়ালটা আর থাকলো না...
আজ সেই আড়াল নেই
আজ সেই কথা নেই
নেই আজ সেই প্রিয় গান
কবিতাগুলিও কেমন যেন হয়ে গেছে
মাঝে মধ্যেই ধমকে উঠে....
তাই ভাবি, কেন যে এতো বুঝি!!!

Monday, November 26, 2007

কী বিস্ময়কর পৃথিবী আমাদের!


সবুজ বৃক্ষরাজি আর লাল গোলাপের সমাহার
দেখে যাই সবকিছুই, চোখ এড়িয়ে যায়নি-
তাদের ফুটে উঠা- আমাদের হৃদয়ের আলোড়ন
ভাবনা জাগে, কী বিস্ময়কর এই পৃথিবী আমাদের!

দৃষ্টি উড়ে নীলাকাশে- চরে বসে শুভ্র মেঘের ভেলায়
ঘুম ভাঙতেই দেখি সূর্যের আশীর্বাদপুষ্ট সোনালি দিন
নিকষ কালো পবিত্রতার ছোঁয়া মিলে নয়নের আলোয়
ভাবনা জাগে, কী বিস্ময়কর এই পৃথিবী আমাদের!

রংধনুর সাতরঙা অস্পৃশ্য প্রতিচ্ছবিটা আগলে রাখে চোখ।
রং সারা পৃথিবী জুড়ে, যারা যাচ্ছে চলে পাশ কাটিয়ে
বন্ধুদের হাত মিলানো আর কুশল বিনিময় দেখে যাই-
ভাবনা জাগে, তারা বলে যায় "তোমায় ভালোবাসি"।

শিশুদের কান্নাও শুনেছি আবার বেড়ে উঠাও দেখেছি
অবাক হয়ে জেনেছি ওরাও অনেক কিছু্ই শিখে যাচ্ছে...
কতোই না রহস্য সর্বত্র! কী সুন্দর এই বেঁচে থাকা!
ভাবনা জাগে, কী বিস্ময়কর এই পৃথিবী আমাদের!

ডিসক্লেইমারঃ
Kenny G's What a wonderful world গানের আলোকে নিজের মতো করে কবিতা লেখার চেষ্টা করলাম। এ গানটার জন্য একজনের ধন্যবাদ প্রাপ‌্য। তবে এখানে সে ঋণ শোধ নাই বা করলাম!

Friday, November 23, 2007

শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ হতে রৌদ্রদগ্ধ কালো ধোঁয়ার পথ

অশুচি আমি নিছক ভাবনার খেয়ালে শুচি হই
অবান্তর প্রশ্নটা শুধাই নিজেকে 'কেমন আছো?'
'ভালো' জবাবটা শোনালো প্রবোধের মতোই ।
হেসে ওঠি, পরম আমার জবাবটাও ঠিক তাই!
'ভালো নেই' বলতে বলতে বেশ ক্লান্ত হয়ে পড়ি
অলস আমি বলি 'ভালো'। কারণ দর্শাতে হয় না।
জোর-করা একটা হাসি নিয়ে আসি- বিভ্রান্তিকর।
মনে মনে বলি 'বোকা'। অশুচি হয়ে বলে যাই-
কারো ছোঁয়া চাই না। সুখ হোক কিংবা দুঃখ!
ভোতা কিছু অনুভূতি নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই
সদা গতিশীল সমাজে পরিবর্তনশীল প্রাণী- মানুষ;
আদর্শ বজায় রেখে সামাজিকতা দেখাতে পারি কই!

শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ ছেড়ে রৌদ্রদগ্ধ কালো ধোঁয়ার পথে
কতো ভীড়! সবার মাঝে একাকী বসে আছি বাতাস ঘেঁষে
সাদা পাতায় কালিমা লেপছি আবোল তাবোল...
ছোটলোক। ভালোবাসা বুঝিনা। পাগল। কুপমন্ডুক।
হরেক উপাধি নিয়ে বিচরণ করে বেড়াচ্ছি প্রতিনিয়ত।
শ্লোগান শ্লোগানে মুখরিত তাই সত্ত্বার ভিতর-বাহির-
"বিকৃত সময়ে বিকৃত মনোভাবে বিকৃত মানুষগুলোর রুচি
চিৎকার করি জ্বলে পুড়ে ছারখার তবুও আমি নাকি অশুচি!"